মনোময়,
‘নিম্নবিত্ত’ শব্দটা একসময় আমরা দু’জন মিলে বয়ে বেড়াতাম। বিকেলের দু’কাপ রঙ চা আর একবাটি ছোলা-মুড়ি। দাম দিতে গিয়ে কখনও তোর কাছে দশ তো আমার কাছে ছয়।নয়তো তোর কাছে ছয় আর আমার কাছে দশ।
এই শেয়ারিংটা ছোলার বাটি থেকে উঠে এলো চেতনার বুননে,মননের মুগ্ধতায়। বিশ্বাসের ঘুলঘুলিতে একটা অনুভবের চড়ুই কখন যে মৌলিক বাসা বুনতে শুরু করলো টেরই পাইনি।তখন মনে হতো দিনগুলো তার প্রেমিক রাতের বুকে মুখ লুকাতে ঝুপ করে সন্ধ্যাঝোপে লুকিয়ে যায় আর রাতগুলো বড্ড ঘুমকাতুরে। দিনের আলোয় চোখ মেলতেই চায় না।আর এখন? দীর্ঘতম দিনগুলো পেরিয়ে যখন নিজেকে লুকোবার অন্ধকার খুঁজি, দেখি সেই অন্ধকারের গায়েও জ্বলে সোডিয়াম জোনাকি।
তোর উচ্চাশার চৌবাচ্চা এখন কানায় কানায় পূর্ণ। তবু আমি যেন মাঝেমাঝেই শুনতে পাই তোর তৃষ্ণার হাহাকার। কেনো বলতো’? না না, তোর তো এমন হবারই কথা না। এ আমারি ভুল। আমারই হাহাকার তোর পাঁজর পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে আমার বুকেই ফিরে আসছে। তাই হবে। যে মানুষ রুপালী তারার দেশে রইবে বলে মাটির ঘ্রাণ চাপা দিলো রকমারি কৃত্রিম ফুলের সৌরভে তার তৃষ্ণাও নিশ্চই ডুবে মরেছে বিভ্রান্তির জাগতিক জলে।
আমাদের স্বপ্ন, ইচ্ছে, পথ ভাগ হয়ে গেল। এমন অনেক কিছুর সাথে ভাগ হলো নিম্নবিত্ত শব্দটিও। আমায় নিম্নে রেখে বিত্ত নিয়ে তুই সরে গেলি। জেদের কাছে জিতে যাবার আনন্দে হলি গর্বিত। আমি হেরে গিয়ে তোকে জিতিয়ে দেবার আনন্দে আপ্লুত।
মনো, তুই কি সত্যিই জিতেছিলি?
ইতি
তোর নিশ্চয়তা
*
লেখক: সম্পাদক, জলধি
Development by: webnewsdesign.com