ব্রেকিং

x

পিকে হালদার মামলার জাল গোটাতে শুরু করেছে ইডি

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২ | ৬:৪৩ অপরাহ্ণ |

পিকে হালদার মামলার জাল গোটাতে শুরু করেছে ইডি
সংগৃহীত ছবি

সবমিলিয়ে প্রায় ২০১ দিন ভারতের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) তার ছয় সহযোগী। প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে ঠিক কবে পি কে হালদার মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়ার রশি গোটাতে শুরু করবে ইডি। ৫৬ দিনের জেল হেফাজত শেষে আজ বৃহস্পতিবার পিকে হালদারকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হলে মিলেছে সেই আভাস। আজ আদালতে ইডির আইনজীবী বলেছেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া গুটিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে ইডি।’ এদিকে পি কে হালদার স্নায়ুরোগ সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু জেলে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী।

ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন ‘অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কারাগারে থাকা অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি।’

এর আগে কয়েক দফায় দীর্ঘমেয়াদে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেও এদিন স্বল্প মেয়াদে তা দেওয়া হয়। স্বভাবতই এ মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আইনজীবী অভিজিৎ মান্না বলেন ‘মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। আর সেই কারণেই জেল হেফাজতে মেয়াদ কমিয়ে আনা হচ্ছে।’

আগামী বছর মার্চের মধ্যেই বাংলাদেশে ফেরানো হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবথেকে বড় অর্থ পাচারকারী এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে। গত ২২ সেপ্টেম্বর ইডির গোপন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছিল। এদিন ইডি এবং অভিযুক্তদের আইনজীবীর পাল্টাপাল্টি দাবিতে সত্যতা মিলেছে সেই সূত্রের।

এদিন স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টা নাগাদ তাদের বিদ্যুৎ কুমার রায়ের এজলাসে তোলা হয়। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক আগামী ৮ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এসময় আদালতে এই মামলার মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তার মক্কেল স্নায়ু রোগে আক্রান্ত এবং প্রকৃত চিকিৎসার দরকার। তাই তাকে যেন কলকাতার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল শেঠ শুকলাল করোনারি মেমোরিয়াল এসএসকেএম’র মতো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করা হয়। আদালতও সে ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবী আরও জানান, ইডি’র তরফে সাড়ে চার হাজার পাতার যে আরিইউডি’র কপি জমা দেওয়া হয়েছিল, তার বেশ কিছু অংশ অস্পষ্ট। তাই সেই কপিগুলোও পুনরায় জমা দেওয়া হয়। সে ব্যাপারেও আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দেন। পরবর্তী হাজিরার দিন পর্যন্ত অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই কারাগারে থাকবেন। তবে এই সময়ে প্রয়োজনে কারাগারে গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলেও এদিন আদালত জানান।

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশভিত্তিক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পি কে হালদার, তার ভাই ও অন্য সহযোগীরা। অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে পি কে হালদারের সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে।

গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২ (পিএমএলএ) এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পি কে হালদার সহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে, অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

Development by: webnewsdesign.com