’প্রবাসজীবন বেছে নিয়েছি। যে জন্য চাইলেও আর আগের মতো নিয়মিত অভিনয় করা সম্ভব নয়। কিন্তু যখনই দেশে ফিরি, অভিনয় জগতের মানুষগুলোর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করি। তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের যে হৃদ্যতা- সেটা এখনও অটুট। তাই তো আমাকে নিয়ে কাজের পরিকল্পনাও তাঁদের মাথায় থাকে। তাঁদের প্রস্তাব ফেরানোও কঠিন।যে জন্য দেশে ফিরলে অন্তত একটি-দুটি হলেও নাটক, টেলিছবিতে অভিনয় করতেই হয়। অভিনয়ে অনিয়মিত; তারপরও কোনো এক চরিত্রের সঙ্গে মিশে গিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো এখনও রোমাঞ্চকর মনে হয়। অভিনয়ের ক্ষুধা একেবারে ফুরিয়ে যাইনি বলেই হয়তো এই অনুভূতি। তাই ঘুরেফিরে আবারও অভিনয়ে ফেরা।’
অনেকদিন পর দেশে ফিরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো নিয়ে একই কথা বলে গেলেন নন্দিত অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান। তাঁর এই কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, শিগগিরই এই অভিনেত্রী আবারও পর্দায় দেখা যাবে। জানা গেল এরই মধ্যে ‘মৎস্যকন্যা’ নামের একটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এটি পরিচালনা করছেন মাহমুদ নিয়াজ চন্দ্রদীপ। এ নাটকে রিচির সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করছেন- সাবরিন আজাদ, সাদ্দাম, সৈকত সিদ্দিকসহ অনেকে। নাটকের কাহিনি গড়ে উঠেছে সমুদ্র উপকূলের জেলেদের জীবন-সংগ্রাম নিয়ে। সেখানে তুলে ধরা হয়েছে, নারী জেলেদের কত ধরনের বাধার মুখে পড়তে হয়। রিচির কথায়, এ ধরনের গল্পে আগে কাজ করার সুযোগ খুব একটা পাননি। তাই গল্প শুনেই অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলেন। চেষ্টা করেছেন, চরিত্র ক্যামেরার সামনে বাস্তব করে তুলে ধরার। নাটকের কাহিনি এবং প্রতিটি চরিত্র দর্শকমনে আঁচড় কাটবে বলেও মনে করেন এই অভিনেত্রী।
রিচির কাছে ভক্তদের প্রত্যাশা আগের মতোই আছে। বরং ছোটপর্দায় এখন কম দেখা যায় বলে অনেকে প্রহর গুনে যান তাঁর নতুন কোনো নাটক-টেলিছবির জন্য। রিচিও সেটা জানেন বলেই দেশে থাকাবস্থায় কিছু না কিছু করার চেষ্টা করেন। এখন কথা হলো, টেলিভিশন দুনিয়ার বাইরেও বিনোদনের নতুন মাধ্যম তৈরি হয়েছে। ওয়েব ছবি, সিরিজ নির্মিত হচ্ছে এবং দর্শকের মাঝেও সাড়া ফেলছে। এই মাধ্যমে কি রিচিকে কখনও দেখা যাবে? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘কখনও ওটিটিতে কাজ করব না- এটা জোর দিয়ে বলতে চাই না। অনলাইন দুনিয়া বিনোদনের নতুন সব দরজা খুলে দিয়েছে। দেশে এলে নিজেও যখন অভিনয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাই, তখন মাধ্যম বদলে গেলে সমস্যা কি। ওটিটি সময়ের চাহিদা পূরণ করছে। সহশিল্পী অনেকেই সেখানে কাজ করছেন, প্রশংসা পাচ্ছেন। হয়তো আমিও কোনো একসময় আবারও সহশিল্পীদের মতো ওটিটির জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে যাব। কিন্তু এখনই কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’
এত গেল অভিনেত্রী রিচির প্রসঙ্গ। ব্যক্তি রিচির কথা প্রসঙ্গ এলে দেখা যায়, তিনি অন্য সবার মতোই খুব সাধারণ। দুই সন্তান নিয়ে অনেক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। কিন্তু বিদেশবিভুঁইয়ে থাকলেও মন পড়ে থাকে দেশের মাটিতে। তাই তো দেশে ফিরলেই নাড়ির টানে ছুটে যান দাদাবাড়ি নীলফামারীতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখন শীতের দেশে বসবাস করেন, সেই হিসেবে এ দেশের শীতল আবহাওয়া তাঁকে কাবু করার কথা নয়। কিন্তু রিচি শোনালেন ভিন্ন কথা। বললেন, ‘যতই শীতের দেশে থাকি না কেন, নীলফামারীর ঠান্ডা সত্যি কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ফিরিয়ে এনেছিল শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি। সেই সময়টা বারবার ফিরে পেতে ইচ্ছা করে। জানি, হারিয়ে যাওয়া সময় ফিরে আসে না; তাই কিছু সময় স্মৃতি রোমন্থনে ডুবে থাকতে ভীষণ ভালো লাগে। আসলে দেশ ও দেশের মানুষদেরভুলে থাকা কঠিন। তাই শত ব্যস্ততার মধ্যে স্বদেশে ফিরতে হয়। এই ফেরা যেন অব্যাহত থাকে- এই কামনাই করি।
Development by: webnewsdesign.com