ব্রেকিং

x

জাবির সমাবর্তনে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৯:০৮ অপরাহ্ণ |

জাবির সমাবর্তনে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ
সংগৃহীত ছবি

আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তন। কিন্তু সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ করেছেন সার্টিফিকেট উত্তোলন করা একাধিক শিক্ষার্থী। আবার অনেক শিক্ষার্থী টাকা জমা দিলেও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য বিদেশ থেকে এসেছেন। এমন পরিস্থিতিতে এর কোনো সমাধান দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৭-১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, ওয়েবসাইট ডাউন থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করতে না পারায় ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। রেজিস্ট্রেশন ফি অনার্সের জন্য ২৫০০ টাকা, মাস্টার্স ২৫০০ টাকা আবার অনার্স মাস্টার্স উভয় একসাথে ৪০০০ টাকা ধরা হয়।

এদিকে অনেক শিক্ষার্থী জরুরি প্রয়োজনে মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করেছেন। কিন্তু তারাও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে চান। তাদের অংশগ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. সালাউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, এই সমাবর্তনের আওতায় যে সকল শিক্ষার্থী জরুরি প্রয়োজনে সমাবর্তনের পূর্বে উপাচার্যের অনুমতিক্রমে মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করেছেন তারাও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে তাদেরকে মূল সার্টিফিকেট ফেরত বা জমা দিতে হবে অথবা গাউনের মূল্যের সমপরিমাণ ৩০০০ টাকা (ফেরতযোগ্য) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চলতি নম্বরে জামানত হিসেবে জমা দিয়ে জমার রশিদ সংরক্ষণ বা প্রদর্শন করতে হবে।

কিন্তু মূল সার্টিফিকেট উত্তোলন করা অনেক শিক্ষার্থী জানান, তারা রেজিস্ট্রেশন করার সময় টাকা পরিশোধের বিষয়ে জানতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানায়, শিক্ষার্থীদেরকে সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন ফি’র পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ব্যাংক একাউন্টে ৩০০০ টাকা জমা দিতে হবে।

আবার অনেক শিক্ষার্থী শুধু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের একাউন্টে টাকা জমা দিলেও সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন করেননি এবং ফিও জমা দেননি। ফলে তারা সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন কমিটি। এতে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষার্থীরা।

তারা জানায়, যদি টাকা দিয়েও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে হয় তাহলে সে ব্যবস্থাও করে দিন আমাদের। কিন্তু এই মুহূর্তে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারব না ভেবেই দুঃখ লাগছে। অনেক আগ্রহ নিয়ে দেশে এসেছি বন্ধুদের সাথে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করব।

তবে এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুতই জানাতে পারব।

এ বিষয়ে সমাবর্তনের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের সাথে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সমন্বয় করে করে আমরা এর সমাধান করব। আশা করি যারা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা দিয়েছে তারা সবাই সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের তথ্য মতে, স্নাতকধারী (সম্মান) ১২ হাজার ৪৬৮ জন, স্নাতোকোত্তর সম্পন্নকারী ১০ হাজার ৩৭১ জন, উইকেন্ড প্রোগ্রামের ৮ হাজার ৭৫ জন ও এমপিল-পিএইচডি সম্পন্নকারী ৮০২ জনসহ মোট ৩১ হাজার ৭১৬ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে রেজিস্ট্রেশন না করায় মাত্র ১৫ হাজার ২১৯ জন গ্র্যাজুয়েট রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন বলে জানিয়েছে রেজিস্ট্রেশন কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা।

ফলে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অন্যদিকে একাধিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রেজিস্ট্রেশন ওয়েবসাইটের কারিগরি ত্রুটি, রেজিস্ট্রেশন সফটওয়্যারের ধীরগতি, রেজিস্ট্রেশন করার সময় সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়া, তথ্য আপলোড না নেয়া, ফাংশনের জটিলতা, হল ক্লিয়ারেন্সের ভোগান্তি ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে নির্ধারিত সময়ে তারা রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেনি।

Development by: webnewsdesign.com