ব্রেকিং

x

১৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নগদ অর্থসংকট

সোমবার, ২১ মে ২০১৮ | ৪:৫১ অপরাহ্ণ |

১৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নগদ অর্থসংকট

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদ অর্থসংকটে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৮ বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারী-মার্চ’১৮) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, আমানত প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়ায় কোম্পানিগুলোর এ আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের। প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৯.৩২ টাকা ঋণাত্মক। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১.৭২ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

এরপরই নগদ অর্থের সংকটে রয়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স। আলোচিত সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি সমন্বিত ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৮.৯৭ টাকা ঋণাত্মক। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি সমন্বিত ক্যাশ ফ্লো ৪.১৩ টাকা ছিল। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রিমিয়াম লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৭.৫৩ টাকা ঋণাত্মক। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৩৪ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

এছাড়া ইসলামিক ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ৫.১৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৪.১০ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ০.৭৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৫.৯৪ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

বিআইএফসির শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ১.১৯ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৫৬ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ৪.৯৩ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ১.৫১ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

জিএসপি ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ১.৮৩ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.১৬ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ০.৩৩ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৩.২৩ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির নগদ অর্থের সংকট কমেছে ২.৯০ টাকা।

আইপিডিসির শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ২.৬৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৬৩ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ১.২৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৪.৩৯ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির নগদ অর্থের সংকট কমেছে ৩.১১ টাকা।

মাইডান্স ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ১.৮৭ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ২.৪৮ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

প্রাইম ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি সমন্বিত নগদ অর্থের ঘাটতি হয়েছে ১.৩৫ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৬৫ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

উল্লেখ্য, কোন কোম্পানির কাছে কি পরিমাণ নগদ অর্থ আছে তা অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। একাধিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ব্যাংকের ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে যাওয়া মানে ওই ব্যাংকটিতে নগদ অর্থের সংকট তৈরি হওয়া। শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) যত বেশি ঋণাত্মক, নগদ অর্থের সংকটও তত বেশি। এ অবস্থা তৈরি হলে চাহিদা মেটাতে ব্যাংকটিকে চড়া মাশুলে স্বল্প মেয়াদে টাকা ধার করতে হয়। তাতে খরচ বাড়ে। আর খরচ বাড়লে আয় কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।

তারা আরো বলেন, শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে যেকোনো কোম্পানির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লোও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। এটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ধারণা পাওয়া যায়। ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক মানে ওই কোম্পানির কাছে নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে। আর ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক মানে হলো ওই কোম্পানির হাতে উদ্বৃত্ত তহবিল রয়েছে।

অর্থকাল/এসএ/খান

Development by: webnewsdesign.com