ব্রেকিং

x

৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩ | ৯:৪৬ অপরাহ্ণ |

৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ
সংগৃহীত ছবি

কাগুজে একটি প্রতিষ্ঠানের’ নামে এবি ব্যাংকের ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ওই ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তিনমাসের মধ্যে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব, বিএফআইইউ, সিআইডি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘খেলাপির তথ্য লুকিয়ে আরও বড় জালিয়াতি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর সেটি আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত বুধবার (২৪ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুর ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

আদেশের আগে স্বপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশনার বিরোধিতা করেন উপস্থিত আইনজীবী আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক ও অ্যাডভোকেট মইনুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজিম।

শুনানিতে আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, এ ঋণের বিষয়টি জানতে পেরে এরইমধ্যে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউ আটকে দিয়েছে। যেহেতু ঋণটি আটকে দেওয়া হয়েছে, এ অবস্থায় রুল জারির প্রয়োজন দেখছি না। রুল-আদেশ হলে ব্যাংকটির আমানতকারীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তাদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে। আদেশ হলে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যাবে। যে কারণে বলছি, স্বপ্রণোদিত রুল-আদেশ সবসময় মঙ্গলজনক নাও হতে পারে।

আইনজীবী মাহবুব শফিক বলেন, রুলসহ আদেশ দেওয়ার আগে প্রতিবেদনটির সত্যতা যাচাই করার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবেদনটির বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করা জরুরি। দেখা যাক, এবি ব্যাংক এ প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ দেয় কি না। আদেশের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা যেতে পারে।

আইনজীবী মইনুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই ব্যাংকিং খাতের অবস্থা টালমাটাল। এ অবস্থায় রুল আদেশ দিলে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সারা বিশ্বেই ব্যাংকিং খাতে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন দেশে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।

এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ তার বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে বলেন। তবে আইন কর্মকর্তা রুল জারি বা অন্তবর্তী আদেশ দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেননি। এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।

যে কোম্পানির অনুকূলে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক তার মালিকানায় দুজনের নাম উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে এর সুবিধা নিতে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী হায়দার রতন, যিনি কিছুদিন আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে রাতে ঋণের টাকা তুলে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।

যদিও জালিয়াতির এ ঋণের তথ্য জানতে পেরে এরইমধ্যে তা আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠানের’ নামে ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ব্যাখ্যা চেয়েছেন তারা।

বুধবার (২৪ মে) ‘খেলাপির তথ্য লুকিয়ে আরও বড় জালিয়াতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি ভুয়া কোম্পানির অনুকূলে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক, যার সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী রতন। জালিয়াতির এ ঋণের তথ্য জানতে পেরে এরইমধ্যে তা আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদনের বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com